১২ মার্চ ২০২৫ , ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১ 

বিশাল বাংলা

এবার রংপুরে নারীদের ফুটবল ম্যাচ বাতিল

বাংলা ওয়াচ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:০১, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এবার রংপুরে নারীদের ফুটবল ম্যাচ বাতিল

স্থানীয় দুটি ইসলামি সংগঠনের বিরোধিতার মুখে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় নারী ফুটবলারদের একটি ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে প্রশাসন মাঠ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে স্থানীয় বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জয়পুরহাট ও রাজশাহীর নারী ফুটবল দলের খেলা হওয়ার ছিল।

খেলার আয়োজক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বিকেল ৩টায় তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে দুই জেলার নারী দলের খেলার আয়োজন করা হয়। আয়োজকেরা এক সপ্তাহ ধরে এই ম্যাচের বিষয়ে এলাকায় মাইকিং করেছেন। খেলার সব আয়োজন সম্পন্ন হওয়ার পর দুপুর ১২টার দিকে এ খেলা বন্ধের ডাক দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তারাগঞ্জ উপজেলা কমিটির সভাপতি আশরাফ আলী। তিনি মাইকিং করে খেলা বন্ধের ঘোষণা দেন।

খেলা বন্ধের ঘোষণা নিয়ে ম্যাচের আয়োজক এবং ইসলামী আন্দোলন ও ইত্তেহাদুল উলামার নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। আলোচনায় বিএনপি ও জামায়াতের নেতাসহ স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিদেরও ডাকা হয়। তবে উভয় পক্ষ নিজের অবস্থানে অনড় থাকায় প্রশাসন খেলা বন্ধ করে জনসমাগম নিষিদ্ধ ও ১৪৪ ধারা জারি করে।

ইউএনও রুবেল রানা বলেন, ‘খেলার আয়োজক এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তারাগঞ্জের নেতা ও ইত্তেহাদুল উলামা সংগঠনের নেতাদের নিয়ে বসা হয়েছিল। সেখানে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির নেতা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও ছিলেন। কিন্তু কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নন। তাই এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটার শঙ্কা দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেখানে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।’

বিকেল ৫টায় বুড়িরহাট মাঠে গিয়ে দেখা যায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। কাউকে মাঠে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে। খেলতে না পেরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মাঠ ত্যাগ করে জয়পুরহাট ও রাজশাহী নারী ফুটবল দল।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তারাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মাওলানা আশরাফ আলী বলেন, ‘যেখানে খেলার আয়োজন করা হয়েছে, তার ৩০০ গজের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী একটি মাদ্রাসা, একটি মসজিদ রয়েছে। এলাকার পরিবেশ নষ্ট করতে এই খেলার আয়োজন করা হয়েছে। তাই আমরা প্রতিবাদের ডাক দিয়েছি।’

ম্যাচের আয়োজকদের একজন নয়ন মিয়া বলেন, ‘এলাকার ফুটবলপ্রেমীদের আনন্দ দিতে এ খেলার আয়োজন করা হয়েছিল। এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ খেলা বন্ধ করে দেওয়া হলো। খেলতে না পারায় বিকেলে নারী ফুটবলাররা ফিরে গেছেন। এতে করে দেশের কাছে তারাগঞ্জকে ছোট করা হলো।’