
দুই সপ্তাহ ধরে চলছে লন্ডনপ্রবাসী মো. ইমামুল হক সরদার (এনামুল) ও নাছিমা মোল্লা দম্পতির বড় মেয়ে ডা. সরদার এনি আক্তারের বিয়ের উৎসব। বিয়ের সব প্রস্তুতি শেষে এবার বর আসার পালা। বরের জন্য গ্রামবাসী অধীর অপেক্ষায়। অবশেষে বর এলেন হেলিকপ্টারে। তখন উল্লাসে ফেটে পড়েন উৎসুক গ্রামবাসী। ঘটনাটি শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা কাজীকান্দি গ্রামের।
জানা গেছে, আজ শনিবার ছিল শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের কাজীকান্দি গ্রামের মো. ইমামুল হক সরদারের (এনামুল) বড় মেয়ে ডা. সরদার এনি আক্তারের সঙ্গে চট্টগ্রামের চকবাজার থানার কাপাসগোলা এলাকার আকবর শাহ লেনের আক্তার ফারুক ভূঁইয়ার ছেলে আব্দুল্লাহ আল নাঈম ভূঁইয়ার বিয়ের অনুষ্ঠান। কনে ডা. এনির পরিবার লন্ডনপ্রবাসী আর বর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট আব্দুল্লাহ আল নাঈম ভূঁইয়া অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী।
মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে গত ২১ জানুয়ারি লন্ডন থেকে সপরিবারে ঢাকা আসেন মো. ইমামুল হক সরদার। এরপর ওই দিন তিনি সপরিবারে হেলিকপ্টারে গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর সদর উপজেলার কাজীকান্দি গ্রামে আসেন। এর পর থেকে শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। বিয়ে উপলক্ষে দুই সপ্তাহ যাবৎ নাচ-গানসহ নানা আয়োজনে এলাকা মাতিয়ে রাখেন লন্ডনপ্রবাসী এনামুল। গত বৃহস্পতিবার হয়েছে গায়েহলুদের অনুষ্ঠান। এদিন কনের পরিবারের সব সদস্যসহ এলাকাবাসী শতাধিক গাড়ি ও মোটরসাইকেল বহর নিয়ে বাজনা বাজিয়ে বিনোদপুর ইউনিয়নের প্রতিটি সড়কে শোডাউন করেন। এ সময় এলাকাবাসী নেচে-গেয়ে আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে।
এনামুল তাঁর পুরো পরিবারকে গ্রামের মানুষের সঙ্গে পরিচিতি করার জন্য এ ব্যতিক্রম আয়োজন করেন। এ যেন এক অন্য রকম গায়েহলুদের দৃশ্য। এমন রাজসিক গায়েহলুদের ঘটনা শরীয়তপুর জেলায় এই প্রথম। গায়েহলুদের এমন দৃশ্য দেখতে দীর্ঘ পথজুড়ে ছিল হাজারো উৎসুক নারী-পুরুষ ও শিশুর ভিড়। মেয়ের বিয়েতে দেড় কোটি টাকা খরচ করেছেন এনামুল। বিয়ের দিন ৭০টি গরু দিয়ে এলাকাবাসীকে আপ্যায়ন করান তিনি। অনুষ্ঠানের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এ বিষয়ে লন্ডনপ্রবাসী ইমামুল হক সরদার (এনামুল) বলেন, ‘আমার পুরো পরিবার দীর্ঘদিন যাবৎ লন্ডনপ্রবাসী। আমার দুই ছেলে, দুই মেয়ে। ছেলে-মেয়েরা লন্ডনেই বড় হয়েছে। আমাদের গ্রামে তেমন একটা আসা হয় না। আমার ইচ্ছা ছিল মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে গ্রামবাসীর সঙ্গে আমরা পুরো পরিবার পরিচিত হব। এ ছাড়া শখ ছিল মেয়েকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন হেলিকপ্টার দিয়ে এসে নিয়ে যাবে। তাই মেয়ের বিয়ে একটু ব্যতিক্রমভাবে আয়োজন করেছি। বর হেলিকপ্টারে চড়ে এসে আমার মেয়েকে নিয়ে গেছে। আমার মনের ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। এতে আমি ও আমার পরিবার খুশি।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য হুমায়ুন মোল্লা বলেন, ‘এনামুল সরদার এলাকাবাসীর সঙ্গে পরিচিত হতে মেয়ের বিয়েতে ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন করেন। বিয়েতে পাঁচ হাজারের বেশি গ্রামবাসীকে আপ্যায়ন করিয়েছেন। বর হেলিকপ্টারে এসে কনে নিয়ে গেছেন। বিয়েতে এ রকম আয়োজন আমাদের বিনোদনপুর ইউনিয়নে এই প্রথম।’