কুমিল্লার লালমাই উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল মোতালেবের মা গতকাল রোববার মারা যান। মায়ের জানাজা ও দাফনে অংশ নিতে চার ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয় তাঁকে। প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মাকে শেষ বিদায় দিয়েছেন তিনি। তবে জানাজা ও মায়ের লাশ বহনের সময় তাঁর হাতে হাতকড়া ছিল।
আজ সোমবার দুপুরে ওই যুবলীগ নেতা হাতকড়া পরা অবস্থায় উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের দুতিয়াপুর এলাকার নিজ বাড়ির পাশের মাঠে মায়ের জানাজায় অংশ নেন। তাঁর হাতকড়া পরা অবস্থায় জানাজায় অংশ নেওয়া ও মায়ের লাশ বহনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, গতকাল রাত ৯টা ২০ মিনিটে যুবলীগ নেতা আবদুল মোতালেবের মা হাফেজা খাতুনের মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ১১৭ বছর। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে মায়ের জানাজা ও দাফনে অংশ নিতে আবদুল মোতালেবের প্যারোলে মুক্তি চেয়ে আবেদন করা হয়। আজ বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত তাঁকে প্যারোলে মুক্তির অনুমতি দেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিরুল কায়ছার।
জানাজায় অংশ নেওয়া প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, প্যারোলে মুক্তি পেয়ে আবদুল মোতালেব প্রথমে বাড়িতে যান। মায়ের মরদেহ দেখেন। পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন। এরপর হাতকড়া পরেই মায়ের জানাজায় অংশ নেন। মায়ের লাশের খাটিয়া কাঁধে বহন করেন হাতকড়া পরেই।
আবদুল মোতালেবের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম জানান, ১১ ডিসেম্বর বাগমারা উত্তর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমানকে কোনো মামলা ছাড়াই বাগমারা বাজার থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ। বিষয়টি জানার পরদিন ১২ ডিসেম্বর সকালে লালমাই উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল মোতালেব, বাগমারা দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ কর্মী জাহাঙ্গীর আটক আবদুর রহমানকে দেখতে কুমিল্লা ডিবি কার্যালয়ে যান। তখন ডিবি পুলিশ তাঁদেরও গ্রেপ্তার দেখান।
জানাজার আগে বক্তব্যে আবদুল মোতালেব বলেন, ‘আমার নসিব খারাপ। ২০০২ সালে যখন আর্মিরা আমারে ধরছে (গ্রেপ্তার), তখন আমার বাবা স্ট্রোক করে মারা গেছেন। এ বছর আমারে ধরার পর আমার মা মারা গেছেন। সেই বিপদে বাবাকে হারাইছি, এই বিপদে মাকে হারালাম। আমার মা-বাবার জন্য সবাই দোয়া করবেন।’
আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে যুবলীগ নেতা আবদুল মোতালেব ১২ ডিসেম্বর থেকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছেন। মায়ের মৃত্যুর কারণে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আজ বেলা ১১টায় ৪ ঘণ্টার জন্য আবদুল মোতালেবকে প্যারোলে মুক্তির অনুমতি দেন।