কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় আরো আটজনকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গত দুদিনে মোট ২৭ জনকে অপহরণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং-শামলাপুর সড়কে দুইটি অটোরিকশা থামিয়ে তাদের অপহরণ করা হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক শোভন কুমার সাহা বলেন,. “চালকসহ অপহরণের ঘটনা শুনে অভিযান চালানো হচ্ছে। কতজন অপহৃত হয়েছেন তার সঠিক তথ্য এখনো জানা যায়নি। অটোরিকশা দুটি উদ্ধার করা হয়েছে।”
সোমবার সকালে পাহাড়ে গাছের চারা রোপণ করতে গিয়ে বনকর্মীসহ ১৮ জন অপহরণের শিকার হন। এরই মধ্যে তাদের জন্য ১৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে।
অপরদিকে রাত ১১টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের বড় ডেইল এলাকার বাসিন্দার নাজিম উদ্দিন মাস্টারের ছেলে জসিম উদ্দিনকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাহারছড়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল ইসলাম।
এই ১৯ অপহৃতকে উদ্ধারে বনবিভাগের সহায়তায় পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন পাহাড়ে অভিযান অব্যাহত রাখার মধ্যেই আরো আটজনকে অপহরণের ঘটনা ঘটল।
শামলাপুর অটোরিকশার লাইনম্যান মো. আবদুর রহিম বলেন, “সকালে হোয়াইক্যং থেকে দুটি অটোরিকশা শামলাপুরের দিকে আসছিল। পথে ডাকাতদলের সদস্যরা দুটি অটোরিকশার চালকসহ মোট নয়জনকে অপহরণ করেছে বলে জানা গেছে।”
খবর পেয়ে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তবে অপহৃতদের নাম-ঠিকানা জানা যায়নি।
কক্সবাজারের জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, “গহীন পাহাড়ে এই অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের সেখানে একক অভিযান চালানোর মত সরঞ্জাম নেই। তাই আমরা যৌথ অভিযান চালানোর জন্য জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছি। আশা করছি, খুব দ্রুত আমরা একটি সফল অভিযান চালাতে পারব।”
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, “অপহৃতদের উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্ব্বোচ সহযোগিতা করা হবে।”
কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্য বলছে, এক বছরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৫৩ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। তাদের মধ্যে ৯৪ জন স্থানীয় বাসিন্দা, ৫৯ জন রোহিঙ্গা নাগরিক। অনেকেই মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে এসেছে বলে পরিবার দাবি করেছে।
টেকনাফ থানার তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ১৮ অগাস্ট থেকে ডিসেম্বর এই পর্যন্ত টেকনাফ থানায় অপহরণের মামলা হয়েছে ১৪টি। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা অন্তত ৬৫। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩০ জনকে।