
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের নিবন্ধনভুক্ত সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সরকারের আশ্বাসে চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটি।
আজ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বৈঠক শেষে বিকেলে চারটার দিকে শাহবাগে এ ঘোষণা দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের যুগ্ম সচিব (মাদ্রাসা অণুবিভাগ) এসএম মাসুদুল হক।
তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে সব ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
পরে আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমরা এ বিষয়ে পরিকল্পনা নিয়েছি এবং কার্যক্রম শুরু করেছি। প্রথমে তাদের এমপিওভুক্ত করা হবে পরে জাতীয়করণ করা হবে। এ ছাড়া মিড ডে মিল ও উপবৃত্তি চালু এবং অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে।
সরকারের এ ঘোষণা মাধ্যমে চলমান আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটি।
জানতে চাইলে সংগঠনটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ আল-আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার পর্যায়ক্রমে সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণসহ আমাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সরকারের আশ্বাসে চলমান আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। আশা করছি, সরকারের ঘোষণা মতো শিগগির আমাদের ৬ দফা দাবি বাস্তবায়ন হবে।
সারা দেশে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা রয়েছে প্রায় ১২ হাজার। এর মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত ৬ হাজার ৯৯৭টি, আর মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত রয়েছে প্রায় ৫ হাজার। এসব মাদ্রাসায় শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার। আর শিক্ষার্থী রয়েছে ১২ লাখের মতো।
গতকাল সোমবার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন আন্দোলনরত ইবতেদায়ি শিক্ষকেরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা।
এর আগে রোববার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে ৬ দফা দাবিতে ইবতেদায়ি শিক্ষকদের পদযাত্রা কর্মসূচিতে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে ছয়জন আহত হয়।
৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলো জাতীয়করণ, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার নীতিমালা-২০১৮ বাস্তবায়ন, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার পাঠদানের অনুমতির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার, রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত কোডবিহীন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলো মাদ্রাসা বোর্ডের কোডের অন্তর্ভুক্তকরণ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসায় ১ জন অফিস সহায়কের পদ সৃষ্টি এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার অবকাঠামো ও ভবন নির্মাণ।