শিক্ষাজীবন শেষ করে কেউ বেরিয়ে গেছেন ২০ বছর আগে। কেউবা সদ্য পড়াশোনার পাট চুকিয়েছেন। তাঁদের কেউ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় দায়িত্ব পালন করছেন। কেউবা সংসারের হাল ধরেছেন। বয়সের মধ্যেও আছে বিস্তর ফারাক। তবে তাঁরা সবাই স্মৃতির টানে সমবেত হয়েছিলেন প্রিয় প্রাঙ্গণে, মিলেছিলেন প্রাণের বন্ধনে।
আজ শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দিনভর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে মেতেছিলেন ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয় কলেজ অডিটোরিয়ামে। যদি অডিটোরিয়ামে গণ্ডি ছাড়িয়ে তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাসে। মুখর হয়ে উঠে পুরো ক্যাম্পাস।
দীর্ঘদিন পর প্রাণের ক্যাম্পাসে সহপাঠীদের পেয়ে আনন্দ–উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। কথা হয় জামালপুরের বাসিন্দা মো. আব্দুল মালেকের সঙ্গে। তিনি ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকোত্তরের ছাত্র। বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
আব্দুল মালেক বলেন, ‘পুনর্মিলনীতে এসেছি সহপাঠী ও শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা হবে সেই আশায়। এসেই দেখা মিলল প্রাণের বন্ধুদের সঙ্গে। অনুষ্ঠানে এসে কী যে ভালো লাগছে, তা বলে বোঝাতে পারব না।’
পুনর্মিলনীর আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ সংগঠকের ভূমিকা পালন করা ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রফিকুল সোহাগ বলেন, আমি এই বিভাগের ছাত্র, সৌভাগ্যবসত এখানেই এখন শিক্ষকতা করছি। আজ সব বন্ধুদের একসঙ্গে পেয়ে, কলেজের সেই দিনগুলোতে ফিরে গেছি।
বরিশাল থেকে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আসেন নাঈম খান। তিনি ২০০৪-০৫ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। নাঈম বলেন, ‘১০–১১ বছর পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হলো। খুবই ভালো লাগছে।’
পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠানের অন্যতম সংগঠক মো. মাহবুবুর রহমান ২০০৪-২০০৫ বর্ষের ছাত্র। বলেন, অনেকদিন পর সব বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। গত দুই মাসের সব ক্লান্তি নিমিষেই দূর হয়ে গেছে।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস। এ সময় তিনি বলেন, ব্যবস্থাপনা বিভাগ ঢাকা কলেজের এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আশা করি, অন্যান্য বিভাগও এ পথ ধরে এগিয়ে আসবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক শিক্ষক মমতাজ শিরীন, সুফিয়া বেগমসহ অন্যান্য শিক্ষকেরা বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক রোকেনুজ্জামান রকেট ও সদস্য সচিব মো. মমিনুর রহমান।
পরে সব বর্ষে প্রতিনিধি নিয়ে ঢাকা কলেজ ম্যানেজমেন্ট এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কমিটি গঠন করা হয়।
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে দিনব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে ছিল প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণা, মিউজিক্যাল চেয়ার, ছবি তোলোর বিশেষ বুথ ইত্যাদি। দুপুরে খাবারের আয়োজনের পাশাপাশি বিকেলে র্যাফল ড্র অনুষ্ঠিত হয়। পরে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।