বিতর্কিত বাংলাদেশী লেখিকা তসলিমা নাসরিনের ইস্যুতে এবার বেঁকে বসেছে ভারত। দেশটিতে অবস্থানের অনুমতির মেয়াদ আরও বাড়াতে চাচ্ছে না নয়াদিল্লি। এতে বড় বিপদে পড়তে যাচ্ছেন তিনি। ভারতে থাকার জন্য নরেন্দ্র মোদির সরকারের দুয়ারে দুয়ারে আকুতি জানিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত তসলিমা। এবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে কড়জোড় আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২১ অক্টোবর) মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে এক পোস্টের মাধ্যমে এই আবেদন জানান তসলিমা নাসরিন। এক্সের পোস্টে তিনি লিখেছেন- প্রিয় অমিত শাহজি, নমস্কার। আমি ভারতে বসবাস করছি। কারণ আমি মহান এই দেশটাকে ভালোবাসি। গত ২০ বছর ধরে এটি আমার দ্বিতীয় বাড়ি। কিন্তু ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২২ জুলাইয়ের পর থেকে আমার বসবাসের অনুমতি আর বাড়াচ্ছে না। আমি এ নিয়ে খুব চিন্তিত। আপনি যদি আমাকে থাকতে দেন, আমি খুব কৃতজ্ঞ হবো। শুভকামনা রইল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন ১৯৯৪ সাল থেকে বাংলাদেশের বাইরে বসবাস করছেন। বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত হন তিনি। প্রতিবেদন বলছে, নারীদের সমঅধিকার ও সাম্প্রদায়িকতার ওপর লেখালেখির কারণে সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন তসলিমা। এরপর নির্বাসিত হন।
ইসলাম বিরোধী লেখালেখির জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি হয়েছিল। এরপর দীর্ঘদিন ইউরোপ-আমেরিকায় থাকার পর ভারতে ঠাঁই হয় তাঁর। ২০০৪ সাল থেকে টানা তিন বছর পশ্চিমবঙ্গে ছিলেন তসলিমা। এরপর লেখা বই ‘দ্বিখণ্ডিত’ নিষিদ্ধ হওয়ার পর হুমকির মুখে পড়ে কলকাতা ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। এর আগে তসলিমা নাসরিনের লেখা বই ‘লজ্জা’, ‘আমার মেয়েবেলা’ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
কলকাতা ছাড়ার পর বেশ কয়েক বছর জয়পুরে ছিলেন তসলিমা, পরে দিল্লির বাসিন্দা হন। রেসিডেন্ট পারমিট দীর্ঘ সময় ধরে পুনর্নবায়ন হলেও সম্প্রতি আটকে গেছে। ভারত-বাংলাদেশে কূটনীতিক সম্পর্ক খানিকটা নড়বড়ে। এর জের ধরে কী আটকে গেছে তসলিমার পারমিট? আসছে এমন প্রশ্নও।
বাংলাদেশের বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করে প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিচ্ছেন তসলিমা নাসরিন। কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসেরও। অনেকে বলছেন, ভারত সরকারের মন পাওয়ার জন্য এমন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তসলিমা নাসরিন।
লেখিকা অবশ্য তেমনটা মানতে রাজি নন। কারণ বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে তাঁর যোগ নেই। তিনি সুইডিশ নাগরিক হিসেবে ভারতে থাকেন। এর আগে ২০১৭ সালে একবার প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে তসলিমার রেসিডেন্ট পারমিট নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। অবশ্য পরে তা ঠিক করা হয়।