২৬ এপ্রিল ২০২৫ , ১২ বৈশাখ ১৪৩২ 

বিদেশ

কাশ্মীরে হামলা: ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন টানাপোড়েন

বাংলা ওয়াচ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:০০, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

কাশ্মীরে হামলা: ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন টানাপোড়েন

গত মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর পুরো অঞ্চলজুড়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। হামলার পরদিন সকাল থেকে উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় যৌথ বাহিনী নজিরবিহীন টহল চালাচ্ছে।

বাড়ানো হয়েছে পর্যটনকেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা। তবুও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকেরা। পর্যটন খাতে ইতোমধ্যেই বড় ধাক্কা লেগেছে। জানা গেছে, জম্মু-কাশ্মীরগামী প্রায় ৯০ শতাংশ বুকিং বাতিল হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, কাশ্মীরকে ঘিরে পর্যটননির্ভর অর্থনীতি বড়সড় চাপে পড়েছে।

এদিকে, এই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্কে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দিল্লি গ্রহণ করেছে একাধিক কড়া পদক্ষেপ।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, দিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনে নিযুক্ত সামরিক উপদেষ্টাদের বহিষ্কার ও ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের সামরিক কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। দুই দেশের হাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তার সংখ্যা কমিয়ে ৫৫ থেকে ৩০ এ আনার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

ভারত আটারি-ওয়াঘা সীমান্তও সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে। ইতোমধ্যেই ওই সীমান্ত দিয়ে যেসব পাকিস্তানি নাগরিক ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাদের ১ মে’র মধ্যে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাময়িকভাবে পাকিস্তানিদের ভারতে প্রবেশ বন্ধ রাখার কথাও জানান পররাষ্ট্রসচিব।

তিনি আরও জানান, ভারত-পাকিস্তান মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত এই আন্তর্জাতিক চুক্তির আওতায় সিন্ধু, চন্দ্রভাগা, শতদ্রু, ঝিলাম ও বিপাশা নদীর পানি পাকিস্তানে প্রবাহিত হতো। চুক্তি স্থগিতের ফলে পাকিস্তান যথাযথ পরিমাণ পানি পাবে না, এ আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পেহেলগামে জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে ভারতের বিভিন্ন শহরে বুধবার দেখা যায় পাকিস্তানবিরোধী বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে হামলার জন্য দেশটিকে সরাসরি দায়ী করে। এই পরিস্থিতিতে কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের অপর জঙ্গি হামলা শুধু কাশ্মীর নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।