সমুদ্রপথে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ার পর এবার পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ শুরু হচ্ছে। খুব দ্রুতই দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট শুরু হবে বলে জানিয়েছে করাচিতে বাংলাদেশ হাই–কমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরাসরি ফ্লাইট শুরু হলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সহযোগিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে উদ্বৃত করা হয়েছে করাচিতে বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার এস এম মাহবুবুল আলমকে। তিনি জানিয়েছেন, হায়দরাবাদে দুই দেশের আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের জন্য একটি প্রদর্শনী আয়োজন করা হবে। হায়দরাবাদ চেম্বার অব স্মল ট্রেডার্স অ্যান্ড স্মল ইন্ডাস্ট্রি (এইচসিএসটিএসআই) এ আয়োজনে সহযোগিতা করবে।
মাহবুবুল আলম ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় বার্ষিক বাণিজ্য প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি আশ্বাস দেন, এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা হবে। উপ-হাইকমিশনার হায়দরাবাদ চেম্বার পরিদর্শনের সময় এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর ওপর জোর দিয়েছেন।
উপ-হাইকমিশনার বাংলাদেশকে একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় বাজার হিসেবে বর্ণনা করে এইচসিএসটিএসআইকে ঢাকায় একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর আহ্বান জানান। তিনি ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া মনিটরিং এবং দ্রুত করার প্রতিশ্রুতি দেন। মাহবুবুল আলম উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের পণ্য ৮০টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে এবং এতে বিলিয়ন ডলার আয় হচ্ছে। তবে, পাকিস্তানের সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্কের মাধ্যমে আরও সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তার কথা তিনি তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এইচসিএসটিএসআই সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম মেমন বলেন, পাকিস্তান–বাংলাদেশ সম্পর্ক ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং বাণিজ্যের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। তিনি বাণিজ্য সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি তুলে ধরেন, যার মধ্যে ১১ নভেম্বর পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সরাসরি কার্গো চালান পাঠানোকে মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন।
মেমন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় প্রদর্শনীতে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান এবং পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ সহজ করার জন্য হাইকমিশনের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ বাণিজ্যিক সহযোগিতার পথ সুগম করবে। ঢাকার কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সে পাকিস্তানি পণ্যের রপ্তানিকারকদের বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার চিত্র তুলে ধরেন মেনন। দ্রুত এ সমস্যার সমাধানের দাবি জানান তিনি।
এইচসিএসটিএসআই সভাপতি সরাসরি বাণিজ্য লাইন স্থাপনের প্রস্তাব দেন। ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসা নীতি সহজ করার আহ্বান জানান। ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াগুলো আরও সহজ করার জন্য একটি সমন্বয় কমিটি গঠনেরও সুপারিশ করেন তিনি।