সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের দিকে বিদ্রোহীরা যতই এগিয়ে আসছিল ততই প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা জোরাল হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত তাই হলো। বিদ্রোহীদের উত্থানের মুখে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো আকাশপথে অজ্ঞাতস্থানে পালিয়ে গেছেন বাশার আল আসাদ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাশার আল-আসাদ দামেস্ক ছাড়লেও কোথায় গেছেন, সেটা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। এর আগে খবর পাওয়া যায়, সিরিয়ার বিদ্রোহী যোদ্ধারা দামেস্কে ঢুকে পড়েছেন। শহরটির বিভিন্ন জায়গায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, আসাদ একটি উড়োজাহাজে চড়ে গেছেন । তবে তাঁর গন্তব্য জানা যায়নি। সিরিয়ার জ্যেষ্ঠ দুজন সরকারি কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে লন্ডনভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ছেড়ে গেছে। সেটায় বাশার আল-আসাদ থাকতে পারেন। ওই উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের পর বিমানবন্দর থেকে সরকারি সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হয়।
সিরিয়ার সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ দুই কর্মকর্তা আসাদের দামেস্ক ছেড়ে যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন। এদিকে বিদ্রোহীরা বলেছেন, তাঁরা দামেস্কে ঢুকে পড়েছেন। সেখানে কোনো সেনা মোতায়েন নেই। তাঁরা বলেছেন, ‘আমাদের বিদ্রোহীদের মুক্তি দেওয়ার খবর আমরা উদ্যাপন করছি।
সিরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর হোমসের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির বিদ্রোহীরা। বিদ্রোহী কমান্ডার হাসান আবদুল ঘানি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে বলেছেন, হোমস শহর ‘পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন’ করা হয়েছে। তিনি জানান, দামেস্কের সেদনায়া কারাগার থেকে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
ব্রিটেন ভিত্তিক সিরিয় অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, সেদনায়া কারাগার খুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে আসাদের সময় কয়েক হাজার মানুষকে বন্দী করা হয়।
বাশার আল আসাদের মতোই ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলরে মুখে ৫ আগস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনার শাসনের ১৫ বছরের শাসনের পতন হয়েছিল। একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে উড়াল দেন শেখ হাসিনা। প্রথমে সেই হেলিকপ্টার অবতরণ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার আগরতলায়। সেখানে তিনি কিছু সময় অপেক্ষার পর বিমানে করে যান দিল্লিতে। এরপর থেকে সেখানেই আছেন শেখ হাসিনা।