২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৭ পৌষ ১৪৩১ 

বিদেশ

সব প্রতিবেশী থেকে বিতাড়িত ভারত

বাংলাওয়াচ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:২৮, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

সব প্রতিবেশী থেকে বিতাড়িত ভারত

তাহলে কী ভারতের পররাষ্ট্র নীতি নতুন করে ঝালাইয়ের সময় এসেছে? হয়তো এসেছে। কেননা প্রতিবেশী কোনো দেশের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক নেই তাদের। নেপাল, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, মালদ্বীপের সঙ্গে আগেই ভারতের উষ্ণ সম্পর্কের দিন শেষ হয়েছে। একমাত্র অবলম্বন ছিল বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এবার তাও গেল। মোট কথা দক্ষিণ এশিয়ায় রীতিমতো বন্ধুহীন হয়ে পড়েছে বিশাল ভূ-খণ্ডের দেশটি।

বিশ্লেষকের মতে, শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে বিপদেই পড়েছে ভারত। সাবেক এই স্বৈরশাসককে ঘিরে ঢাকা-দিল্লির তিক্ততা ক্রমেই বাড়ছে। ভারত ইস্যুতে বাংলাদেশ আর আগের মতো ছেড়ে কথা বলছে না। এক্ষেত্রে মোদি সরকারের পররাষ্ট্র নীতির ব্যর্থতা দেখছেন বিশ্লেষকেরা।

চীন-পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের বৈরিতা বহু পুরোনো। সম্প্রতি ভারতবিরোধী অবস্থান নিয়ে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন চীনপন্থি নেতা মুহাম্মদ মুইজ্জু। ক্ষমতায় বসার পরই ইন্ডিয়া আউট প্রচারাভিযানে নামেন তিনি। ভারতকে সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারেও চাপ দেন।

শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় আধিপত্য রুখে দিতে চলছে ইন্ডিয়া আউট ক্যাম্পেইন। সম্প্রতি দেশটির বিমানবন্দরে ভিসা প্রসেসিংয়ে ভারতীয় কোম্পানিকে সম্পৃক্ত করা হলে এই আন্দোলন গতি পায়।

এদিকে সীমান্ত নিয়ে কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা চলছে ভারত-নেপালের মধ্যে। সংকটের শুরু হিমালয়ের পাহাড়ি এলাকায় ভারতের সড়ক নির্মাণকে কেন্দ্র করে। এর প্রতিক্রিয়ায় এবারই প্রথম ভারতকে এড়িয়ে চীন সফরে গেছেন নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি।

ভারত বলয় থেকে বের হয়ে চীনের দিকে ঝুঁকছে ভুটানও। নিরাপত্তার কারণে প্রতিবেশী দেশগুলোকে ভারতের হাতে রাখা দরকার। আর এটা করতে গিয়ে ভারত পছন্দের সরকারকে ক্ষমতায় রাখার চেষ্টা করেছে। যা টেকসই কূটনীতি নয় বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে ভারত তার পছন্দ অনুযায়ী সরকার রাখার চেষ্টা করেছে। ভারতের স্বার্থ রক্ষা করে চলবে সেরকম সরকার তারা চায়। ফলে একটি বিষয় দেখা যাচ্ছে ভারত এই অঞ্চলে অনেকটা নিজেকে আইসোলেট করে ফেলেছে।

নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, বাণিজ্যে নিয়ন্ত্রণ, সীমান্তে হত্যা, অভিন্ন নদীর একতরফা পানি প্রত্যাহারসহ নানা কৌশলে স্বার্থ আদায়ে তৎপর ভারত। যা বাংলাদেশে জন্ম দিচ্ছে ভারত বিদ্বেষ। তা আরও বেড়েছে গণ-আন্দোলনে পতিত সরকারের প্রধানকে আশ্রয় দেওয়ার মধ্য দিয়ে, বলছেন বিশ্লেষকেরা।    

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবির বলেন, ভারতের সাথে ভালো সম্পর্ক রেখেই মর্যাদার সাথে, পারস্পরিকতার ভিত্তিতে, উপাদেয় সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী- এই বিষয়টা ভারত উপলব্ধি করুক। এছাড়া বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটা পরিবর্তন হয়েছে ভারত সেটাও উপলব্ধ করুক। বিশেষজ্ঞদের মতে, চাপে রেখে একচেটিয়া স্বার্থ আদায়ের প্রবণতাই প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে নষ্টের মূল কারণ।