০৯ জানুয়ারি ২০২৫ , ২৫ পৌষ ১৪৩১ 

বিদেশ

শেখ হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বাড়াল নয়াদিল্লি

বাংলাওয়াচ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:১৬, ৮ জানুয়ারি ২০২৫

শেখ হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বাড়াল নয়াদিল্লি

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারত। গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে দেশে যখন দাবি তীব্র হচ্ছে তখনই প্রতিবেশি দেশটিতে তার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর এই খবর পাওয়া গেল। বুধবার (৮ জানুয়ারি) ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস।

হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ত্যাগ করেন এবং তখন থেকেই তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। সম্প্রতি তার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তবে ভারত কবে শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি প্রতিবেদনে।

দিল্লির ফরেন রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরআরও) শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের অনুমতির মেয়াদ আরো বাড়িয়েছে। তবে তাদের কোনো কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করেননি এবং তারা তথ্যটির বিস্তারিতও জানাননি। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার ভারতে থাকার সুবিধার্থে তার ভিসার মেয়াদ সম্প্রতি বাড়ানো হয়েছে। তবে, তাকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে এমন গুজব নাকচ করে তারা জানিয়েছেন, ভারতে শরণার্থী বা আশ্রয়ের বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো আইন নেই। 

ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অনুমোদিত হয়েছে এবং স্থানীয় ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসের মাধ্যমে কার্যকর করা হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো নিজস্ব কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলেছে, ফরেন রিজিয়নাল রেজিস্ট্রেশন অফিসে আসা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনাকে এ সুবিধা দেয়া হয়েছে।

এর আগেও এফআরআরওর মাধ্যমেই শেখ হাসিনাকে ভারতে থাকার বৈধতা দেয়া হয়। দেশটিতে উদ্বাস্তু সংক্রান্ত আইন না থাকায় এমন পদক্ষেপে নেওয়া হয়। মাত্র একদিন আগেই জুলাই-আগস্ট গণহত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করে বাংলাদেশ। দেশটির প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান। এতে ফের শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

এছাড়া আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের শাসনামলে গুমের ঘটনায় দলটির সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই আদেশ দেন। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

ইন্টারপোলের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও চলছে। এরই মধ্যে ভারতের এফআরআরও অফিসের মাধ্যমে হাসিনাকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার খবর এলো।

৭৭ বছর বয়সী শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতের হিন্দন বিমানঘাঁটিতে পৌঁছান। এরপর থেকে তিনি দিল্লির একটি নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২৩ ডিসেম্বর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাকে ফেরত পাঠানোর জন্য একটি অনানুষ্ঠানিক চিঠি (ভারবাল নোট) পাঠিয়েছে।

বাংলাদেশের প্রত্যর্পণের অনুরোধ গ্রহণের কথা নিশ্চিত করলেও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। অতীতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, শেখ হাসিনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পূর্ণ তার নিজের ওপর নির্ভরশীল। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়স্বাল গত বছর এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, 'প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে আমাদের কাছে তার পরিকল্পনার কোনো হালনাগাদ তথ্য নেই। এটি সম্পূর্ণ তার ওপর নির্ভরশীল।'

সম্পর্কিত বিষয়: