
রাতের খাবারের পর আরামে ঘুম দেওয়ার আগে হাঁটার অভ্যাস গড়ার পরামর্শ দেয় বিশেষজ্ঞরা।
চীনের একটি প্রচলিত প্রবাদ হল- প্রতিবেলার খাবারের পর যদি ১শ’ পদক্ষেপ হাঁটতে পার, তবে আপনি বাঁচবেন ৯৯ বছর।
এই কথা জানিয়ে রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মার্কিন শরীরচর্চার প্রশিক্ষক ডেভিড চেসওর্থ বলেন, “নানান গবেষণায় দেকা গেছে রাতের খাবারের পর মাত্র ১৫ মিনিট হাঁটার অভ্যাসে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। হজম ভালো হয়। এছাড়া মেজাজ ও শক্তি উন্নতিতেও সাহায্য করে।”
তারপরও যদি নৈশভোজের পরে হাঁটার অনুপ্রেরণা না মেলে, তবে আরও তিনটি উপকারের কথা জানান এই প্রশিক্ষক।
যে কারণে রাতের খাবারের পর হাঁটা কার্যকর
“যে কোনো নতুন অভ্যাস গড়তে একটু সময় লাগে। তবে নিয়মিত অভ্যাসের সাথে যদি নতুন কিছু রপ্ত করানো যায় তাহলে সেটা গড়তে বেশিদিন সময় লাগে না”- বলেন চেসওর্থ।
তাই রান্না আর খাওয়া যদি প্রতিদিনের অভ্যাস হয় সেটার সাথে হাঁটা যুক্ত করাটা তেমন কঠিন নয়। মনে রাখতে হবে, খাওয়া শেষে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে হজম করার সময় দিয়ে তারপর হাঁটতে হবে।
রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
চেসওর্থ বলেন, “প্রতিবেলার খাবার খাওয়ার পর হাঁটা উপকারী। বিশেষ করে উচ্চ কার্বোহাইড্রেইট যুক্ত খাবার খেলে; যেমন- রুটি, আলু এবং ভাত।”
সাধারণভাবে প্রত্যেকের রাতের খাবারেই কার্বোহাইড্রেইটের পরিমাণ বেশি থাকে। আর ভারী খাবারের পর হাঁটলে গ্লুকোজের মাত্রা ১২ শতাংশ কমাতে পারে।
বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত হয়
হজমের সময় মেটাবোলিজম বা বিপাক ক্রিয়া খাবারের ‘থার্মিক’ প্রভাবের মধ্যে দিয়ে যায়।
চেসওর্থ ব্যাখ্যা করেন, “মানে হল, এটা খাবার থেকেই শক্তি গ্রহণ করে হজমের শক্তি ব্যয় করে।”
অন্যাভাবে বলতে গেলে, হজমের সময় বিপাক ক্রিয়ার গতি কিছুটা বৃদ্ধি পায়। একইভাবে হাঁটলেও বিপাকক্রিয়া ধীরেসুস্থে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
আর হজম এবং হাঁটা একসাথে হলে- দুইয়ে মিলে বিপাক কার্যক্রম অতি সক্রিয় হয়। ফলে দেহ একপ্রকার ধন্যবাদ দিয়েই অন্যান্য কার্যক্রমের শক্তি পেতে থাকে।
মন মেজাজ উন্নত করে
অন্যান্য শারীরিক কর্মকাণ্ড যেমন ‘এন্ডোর্ফিন্স’ হরমোন বাড়ায়, রাতের খাবারের পর হাঁটলেও সেটাই হয়।
“কয়েকদিন হাঁটলেই দেখবেন, রাতের খাবারের পর হাঁটতে যাওয়ার জন্য আর তর সইছে না”- মন্তব্য করেন চেসওর্থ।
তার কথায়, “রাতের খাবারের পর হাঁটতে যাওয়ার ইচ্ছাটা মনে হতে পারে তেমন কিছু নয়, তবে সার্বিকভাবে এই অতিরিক্ত শারীরিক কাজটা অনেক উপকারী। আর মন মেজাজ যখন ভালো রাখবে তখন ভেতর থেকেই হাঁটার অনুপ্রেরণা আসবে।”
তাই রাতের খাবারে পর সোফায় গড়িয়ে টিভি না দেখে, ১৫ থেকে ২০ মিনিট হেঁটে আসাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।