শীত মৌসুমে ত্বক আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে না। তাই শীতকালে শুষ্কতার সমস্যা দেখা দেয়। কারণ হতে পারে- ঘন ঘন গোসল করা, ক্ষারীয় সাবান বেশি ব্যবহার, বয়স বৃদ্ধি অথবা নির্দিষ্ট কিছু রোগ। এছাড়া শীতের সময়েও চামড়া শুকানোর সমস্যা দেখা দেয়।
“চামড়ার উপরিভাগের স্তর, যাকে বলে ‘এপিডার্মিস’, সেটা পরিবেশের আর্দ্রতার মাত্রায় প্রভাবিত হয়। ঠাণ্ডা আবহাওয়াতে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কম থাকে, যে কারণে ত্বকও শুষ্ক বোধ হয়”- হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিং’য়ের ওয়েবসাইটে ব্যাখ্যা দেন বস্টনে’র ‘ব্রিঘাম অ্যান্ড উইমেন’স হসপিটাল’য়ের চিকিৎসক হাওয়ার্ড ই. লিওয়াইন।
আর্দ্রতা ধরে রাখতে
ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখার প্রথম পদক্ষেপ হল, ঘন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা। যা উপরিভাগে ত্বকের কোষ আর্দ্র করে আর্দ্রতা আটকে রাখবে।
ডা. লিওয়াইন বলেন, “এই ক্ষেত্রে কয়েকটি উপাদান ভালো কাজ করে। হিউম্যাকট্যান্টস- যা আর্দ্রতা আকর্ষণ করে। সেরামাইডস, গ্লিসারিন, সর্বিটল, হায়ালুরনিক অ্যাসিড ও ল্যাসিথিন- এই গ্রুপের উপাদান; যেমন- পেট্রোলিয়াম জেলি, সিলিকন, লানোলিন এবং খনিজ তেল।”
এসব উপাদান ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া লিনোলিয়েক, লিনোলিনিক এবং লরিক অ্যাসিড ত্বক কোমল করে।
সাধারণভাবে বলা যায়- ঘন ময়েশ্চারাইজার শুষ্ক ত্বকের সমস্যা নিরসনে বেশি কার্যকর। পেট্রোলিয়াম জেলি এবং ময়েশ্চারাইজিং তেল (যেমন- খনিজ তেল) ব্যবহারে উপকার মিলবে বেশি। কারণ এগুলোতে জলীয়ভাব কম থাকে। আর গোসলের পর দেহ ভেজা থাকা অবস্থায় মাখলে আর্দ্রতা ভালো মতো আটকে রাখতে সাহায্য করে।
যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে-
পাঁচ থেকে ১০ মিনিটের বেশি গোসল করা যাবে না। বেশিক্ষণ ধরে গোসল করলে ত্বকের তেল স্তর ধুয়ে যায় ফলে আর্দ্রতা হারায়। ব্যবহার করতে হবে কুসুম গরম পানি। গরম পানি ত্বক শুষ্ক করে দেয়।
সাবানের ব্যবহার কমাতে হবে। আর করলেও যেসব সাবানে ময়েশ্চারাইজার উপাদান বেশি সেগুলো ব্যবহার করতে হবে। সুগন্ধি ও অ্যালকোহল যুক্ত ফেইসওয়াশ এবং সাবান ব্যবহার এড়াতে হবে।
শরীর ঘষার জন্য স্পঞ্জ, ব্রাশ এড়াতে হবে। হালকা কাপড় দিয়ে গা মাজতে হবে। একই ভাবে দেহ থেকে পানি মুছতে হবে হালকা চাপে।
গোসল বা হাত ধোয়ার পরপরই ময়েশ্চারাইজার মাখতে হবে।
পেট্রোলিয়াম জেলি বা ঘন ময়েশ্চারাইজারের আঠালোভাব দূরে রাখতে, অল্প করে হাতে নিয়ে শুষ্ক স্থানে মাখলে উপকার মিলবে।
শুষ্কতার জন্য ত্বকে চুলকানি হলে, কোনো মতেই চুলকানো যাবে না। ময়েশ্চারাইজার মাখলেই এই অস্বস্তি দূর হবে।
সুগন্ধি প্রসাধনী যত কম ব্যবহার করা যায় ততই মঙ্গল।
উলের কাপড় পরা এড়ানো উপকারী। আর পরলেও ত্বকের সংস্পর্শে যাতে না আসে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।