
লেখক-পাঠকের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে চাঁদপুর বইমেলা। প্রতিদিন বিভিন্ন বয়সী পাঠক মেলায় আসছেন, কেউ পছন্দসই বই খুঁজছেন, কেউ নিচ্ছেন লেখকের অটোগ্রাফ। লেখকরা দলবেঁধে আসছেন বইমেলায়। চলছে লেখক আড্ডা। সব মিলিয়ে জমে উঠছে চাঁদপুর বইমেলা।
চাঁদপুর শহরের আউটার স্টেডিয়ামে ৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া বইমেলা পাঠকরা প্রতিদিন বিকেল তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত মেলায় অবস্থান করতে পারছেন। মেলা চলবে চলবে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
বইমেলা সম্পর্কে কবি, প্রাবন্ধিক কাদের পলাশ বলেন, অনেক তরুণের বই প্রকাশ পেয়েছে। মেলাটি তারুণ্য উৎসবের সাথে একত্রিত হওয়ায় প্রচুর পাঠক এবং দর্শক আসছেন। প্রত্যাশা করছি, এবার বই বিক্রিও বাড়বে।
অনুবাদক মাইনুল ইসলাম মানিক বলেন, বইমেলা শুরুর পর পাঁচ দিন পেরিয়েছে। ধীরে ধীরে পাঠক উপস্থিতি বাড়ছে। মেলায় নান অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রয়াত লেখকদের স্মরণ করা হচ্ছে। সাহিত্য মঞ্চের আয়োজনে কুইজ প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে। যা ভালো উদ্যোগ।
এবার অনুপ্রাণন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ ‘গণতন্ত্র পুরুষতন্ত্র’ বইয়ের লেখক ও কবি নুরুন্নাহার মুন্নি বলেন, মেলায় পাঠক উপস্থিতি আশা জাগানিয়া। কম-বেশি সবার বই-ই বিক্রি হচ্ছে। পাঠক-লেখকের এই মিলনমেলা অব্যাহত থাকলে বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়বে। ডিভাইসের যুগে পাঠকের হাতে বই তুলে দিতে আরও বেশি বেশি এ ধরনের উদ্যোগ প্রয়োজন।
শিল্পনন্দন স্টলের স্বত্বাধিকারী এইচএম জাকির বলেন, শিশুতোষ বইয়ে ভালো সাড়া পাচ্ছি। অভিভাবকরা শিশুদের পছন্দে বই কিনছেন।
লেখক আরিফুল ইসলাম শান্ত বলেন, এ বইমেলায় আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ এসেছে। লেখকরা প্রতিদিন আসেন। আড্ডা হচ্ছে, পাঠকদের সঙ্গেও মতবিনিময় হচ্ছে। যার মাধ্যমে সত্যিকারের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে বইমেলা।

মেলা কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখওয়াত জামিল সৈকত বলেন, আমরা এই বইমেলায় লেখক-পাঠকদের মিলনমেলা করার চেষ্টা করেছি। এখন পর্যন্ত ভালো সাড়া পেয়েছি। লেখকদের জন্য বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রয়েছে মুক্তমঞ্চ।
এ বছর বইমেলায় চাঁদপুরের লেখকদের প্রকাশিত বইয়ের তালিকায় রয়েছে- ইলিয়াস ফারুকীর ‘জল তিতির’, প্রণব মজুমদারের ‘কবিতার বাড়ি, অর্থের কারবার’, নাসিমা আনিসের ‘কলোনি’, অমল সাহার ‘আলবের্তো মোরাভিয়া দি ক্লাউন, প্লাজমা প্রজেক্ট’, মনসুর আজিজের ‘করতলে বৃক্ষের দাগ’, সৌম্য সালেকের ‘বিংশ একবিংশ’, কাদের পলাশের ‘চাঁদপুরের সংস্কৃতি লোককথা ও অন্যান্য’, মুহাম্মদ ফরিদ হাসানের ‘চিত্রকলার জগৎ’, মাইনুল ইসলাম মানিকের ‘কুরুক্ষেত্রের ঘুড়ি’, রফিকুজ্জামান রণির ‘না ফেরার ব্যাকরণ’, নুরুন্নাহার মুন্নির ‘গণতন্ত্রে পুরুষতন্ত্র’, জব্বার আল নাঈমের ‘আত্মার আওয়াজ’, মিজানুর রহমান রানার ‘এই জনমে’, সঞ্জয় দেওয়ানের ‘জলের ক্যালিগ্রাফি’, জাহিদ নয়নের ‘আততায়ী অন্ধকার’, আরিফুল ইসলাম শান্ত-র ‘মৌন বৃক্ষের রাত্রিদিন’, আহমেদ রিয়াজের ‘বি আর টু থ্রি’, কবির হোসেন মিজির ‘লাল রঙের নামতা’, এইচএম জাকিরের ‘স্মৃতির খাম’ ইত্যাদি।