২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৭ পৌষ ১৪৩১ 

শিল্প ও সাহিত্য

গুচ্ছ কবিতা

কখনো ফেরা হবে না 

সালমা খান রানু

প্রকাশিত: ১৫:৩৪, ৯ নভেম্বর ২০২৪

কখনো ফেরা হবে না 

 

সম্পর্কের সমীকরণ 

যখন পৃথিবীর সব নদী তার গতিপথ ভুলে যাবে,
শুধু রহস্যে ঘিরে থাকা তোমার মানব জনমে আর
কোনো মানবীর ছায়া পড়ুক তা আমি চাই, 
তাহলেই বুঝতে পারবে কোথায় সমুদ্রের গভীরতা,
কোলাহল থামে কোন আকাশ সীমায়! 
কোন আকাশ চেরা কান্না থামায় 
পাহাড় চূড়ায় ঝরনা নেমে! 
ক্লান্ত যখন পথিক তুমি,
মায়াবীনীর ছলে ভুলে হাত বাড়িয়ে 
পৃথিবীর শেষ চিঠি পড়ে বিরহী মন কোন 
মহিরুহের ছায়া মেখে সমীকরণ খোঁজে বেড়ানো সম্পর্কগুলোয়-
দেখতে পাবে জীবন এক সমীকরণহীন সম্পর্ক বহন করে-
জীবনে কোন সম্পর্ক সমীকরণ খোঁজে 
আর কোন সম্পর্ক মিলায় বিলাপহীন কোন সন্ধ্যার! 
লিখে রাখা যায় শ্বেতপদ্মের পাপড়িতে, 
কোন মলিন মল্লিকার ললাট জুড়ে!
মিলিয়ে নিও প্রিয় ও অপ্রিয় যত সম্পর্ক মেখেছো গায়ে।

 

নীরবতা

কেউ জানুক না জানুক তুমি জানো একটা দুঃখ জুড়ে ছিলে,
ছোট বড় সব দুঃখের পাহাড়চূড়ায় এবং পায়ের কাছে  
ছায়ার মতো হয়ে কেউ থাকুক আর না থাকুক তুমিই ছিলে
পাহাড় ও ছায়ার মধ্যে কোনও পার্থক্য দেখিনি, খুঁজিনি আমি 
সে কথা কেউ জানুক বা বুঝুক না বুঝুক 
আমার সুখের অসুখে কিংবা অসুখের সুখে,
অদেখার দেখায় বা দেখার অদেখায় একজনই তো ছিলে-
দেবতাদের মতো নীরবতায় একমাত্র তুমিই ছিলে 

আমাদের এই ধু ধু প্রান্তরে স্থির হয়ে থাকবে সূর্যাস্তকাল  
কেউ মানুক আর না মানুক- জানি, তুমি নিঃশব্দে বলবে হ্যাঁ।

 

কখনো ফেরা হবে না 

দরজা খোলা ছিলো তখনো ফেরেনি নীলাঞ্জন, 
তখন সন্ধ্যা 
দিনের শেষ আলোর ভুলে গেছে গোধূলি, 
দরজার পর্দায় আলো ছিলো না-
সোডিয়াম আলোর মায়াময় করে রাত নেমেছে,
চাঁদ হেলে পড়েছে গলির শেষপ্রান্তে
তখনো নীলাঞ্জনকে দেখা যায়নি গলির মোড়ে!
মিছিলের শ্লোগানের শেষ শব্দ কানে এসে লেগেছে, 
গরম ভাত ঢেকে রাখা টেবিলে, 
দরজায় দেয়া হয়নি ছিটকিনি
তখনো কী নীলাঞ্জনের কোনো খোঁজ ছিলো?
হিমবাহ বইছে, নিস্তেজ গলায় কান্না থামিয়ে 
কুকুরগুলো আশ্রয় পেলো, তখনো
নীলাঞ্জনের ঘরে আলো দেখা যাচ্ছিলো-
গাছগুলো ক্লান্ত
মেহুলের কাঙ্ক্ষিত আলিঙ্গন উপেক্ষা করে, 
বিপন্ন সময়কে আঁকড়ে চলা নীলাঞ্জন
কখনো আর ফিরবে কি-না কেউ কি তা জানে?
তার নামে নীল খামে কোনো চিঠি আসবে 
কি-না তাও পৃথিবীর অজানা।