০৯ জানুয়ারি ২০২৫ , ২৫ পৌষ ১৪৩১ 

শিল্প ও সাহিত্য

নতুন বই

অনুপ্রাণন থেকে বের হলো বিপ্লবী লীলা নাগ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ

বাংলা ওয়াচ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৩৬, ৮ জানুয়ারি ২০২৫

অনুপ্রাণন থেকে বের হলো বিপ্লবী লীলা নাগ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ

অনুপ্রাণন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে কবি, প্রাবন্ধিক ও গবেষক বঙ্গ রাখালের প্রবন্ধ গ্রন্থ ‘বিপ্লবী লীলা নাগ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ’।  রাজীব দত্তর প্রচ্ছদে বইটির বিনিময় মূল্য রাখা হয়েছে ৩৩০ টাকা।

বইটিতে পনের জন ব্যক্তির জীবন ও কর্মের বিশেষ দিক হাজির করা হয়েছে। যার মধ্যে দিয়ে তাঁদের সম্পর্কে পাঠকের সম্যক একটি ধারণা প্রাপ্তির সুযোগ ঘটে। লীলা নাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী। নারী জাগরণে যার রয়েছে বিশেষ অবদান। প্রবন্ধে খুঁজে পাই আমাদের সংগ্রামী অতীত। বইটিতে রয়েছে সমাজ সংস্কারে আবুল মনসুর আহমদের ভূমিকা ও প্রাসঙ্গিকতা; আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের সাহিত্য সমাজের বহুরূপ; বুলবুল চৌধুরী : সহজ-সরল মানুষের অবয়ব; রাবেয়া খাতুনের ছোটগল্প : ‘অপারেশন কদমতলী’ ও ‘গণকবর’; শাহীন আখতার : প্রসঙ্গে ‘তালাশ’; বাংলার বীর জননী- রমা চৌধুরী; প্রকৃতির কবি : দ্বিজেন শর্মা; অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম : সংগ্রামী সাধকের প্রতিকৃতি; তারেক মাসুদ : প্রসঙ্গ ‘মাটির ময়না’; লুৎফর রহমানের কথাসাহিত্য: বাস্তবতার বীক্ষণ; স্বপ্নবাজ পুরুষ : ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী; মাহমুদ শাহ কোরেশী : ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির সাধক; আবেদা আফরোজা: যিনি থাকেন স্মৃতির অলিন্দে। 

চিন্তক, সাংবাদিক ও গবেষক ড. কাজল রশীদ শাহীন বঙ্গ রাখালের লেখা সম্পর্কে বলেন, ‘বঙ্গ  রাখালকে সাধুবাদ ও স্বাগতম জানাই। উত্তর প্রজন্মের দায় ও দরদ পুরণে তিনি প্রবন্ধ সাহিত্যের মতো কঠিন ও অপ্রশংস একটি ধারাকে বেছে নিয়েছেন বলে। কেননা, প্রবন্ধ সাহিত্য চর্চা কেবল কঠিন কাজ নয়, সৃজনশীল ও মননশীল লেখালেখির মধ্যে সবচেয়ে কঠিন কাজ। কারণ, এখানে অনেক বেশি প্রস্তুতি লাগে, অনুশীলন লাগে, অধ্যাবসায় ও অবলোকন লাগে। ফলে, তার জন্য নিজেকে প্রতিনিয়ত নিঃসঙ্গতার কাছে সঁপে দিতে হয়। দেশ, জাতি, রাষ্ট্র, সমাজ, জনগণকে বুঝতে হয় তার আদ্যপান্ত সহযোগে। অনুভবে নিতে হয় তার অতীত-বর্তমান ও ভবিষ্যতের নিরিখে। বঙ্গ সেই কঠিন পথ বেছে নিয়েছেন স্বেচ্ছায়। আমাদের প্রত্যাশা তিনি প্রবন্ধ সাহিত্যকে ঋদ্ধ করবেন, নতুন চিন্তা, নতুন বয়ান হাজির সাপেক্ষে- আমাদের জন্য যোগাবেন নতুন দিশা। যে দিশার স্বপ্ন দেখেছিলেন আবুল মনসুর আহমদ, লীলা নাগ, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, ডা.জাফরুল্লাহ’র মতো মণিষীজন।”

বইটি সম্পর্কে লেখক বলেন- কিছু পাঠক এই বই পড়ে সামান্য উপকৃত হলেই আমি সার্থক। এখানে আমি সাহিত্য বা কোনব্যক্তির জীবন নিয়ে রীতিমত বিশ্লেষণ করতে বসিনি। শুধু বলেছি নিজের দ্বিধা-অপূর্ণতা কিংবা আস্থাহীনতার কথা। যা বুঝেছি তাই নিজের মত করে বলবার চেষ্টা করেছি মাত্র। এই গ্রন্থে মূলত আমার ভাবনাগুচ্ছই কিঞ্চিৎ রেখাচিত্রণে রূপান্তিত হয়েছে।

বঙ্গ রাখাল-এর জন্ম ১৯৯৩ সালের ১২ জুন ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর গণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। জাতীয় দৈনিকের পাশাপাশি দেশে-বিদেশের অনলাইনে ও লিখছেন তিনি।

লেখালেখির হাতেখড়ি কবিতা হলেও প্রবন্ধসাহিত্য নিয়েই এগিয়ে চলেছেন। কবি বঙ্গ রাখালের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে-সংস্কৃতির দিকে ফেরা (প্রবন্ধ, ২০১৫), লোক মানুষের গান ও আত্ম অন্বেষণ (গবেষণা, ২০১৬), মানবতাবাদী লালন জীবন অন্বেষণ (প্রবন্ধ, ২০১৭), হাওয়াই ডাঙ্গার ট্রেন (কবিতা, ২০১৮), মনীষা বীক্ষণ ও অন্যান্য (প্রবন্ধ, ২০১৮), অগ্রন্থিত রফিক আজাদ (সম্পাদনা, ২০১৯), পাগলা কানাই ও তাঁর তত্ত্ব দর্শন (সম্পাদনা, ২০১৯), লণ্ঠনের গ্রাম (কবিতা-২০১৯), যৈবতী কন্যা ইশকুলে (কবিতা, ২০২০), কবিতার করতলে (প্রবন্ধ, ২০২০), অন্ধ যাজক (কবিতা-২০২১), ছোটবোয়ালিয়া-জয়ন্তীনগর-বসন্তপুর গণহত্যা (অভিসন্দর্ভ-২০২১)।
তিনি প্রবন্ধে পেয়েছেন-আবুল মনসুর আহমদ পুরস্কার ২০২০, জলধি সম্মাননা- (কবিতা ২০২১), অনুপ্রাণন সাহিত্য পুরস্কার-২০২২, কাব্যশ্রী সাহিত্য পুরস্কার-২০২৪ (গবেষণা)।