তাবলিগ জামাতের সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ ঘোষণাসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছে জুবায়েরপন্থিরা। এজন্য বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কাকরাইল এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তারা।
একইসঙ্গে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠ এবং তাবলিগের প্রধান কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থিদের কোনো কার্যক্রম চালাতে না দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) কাকরাইল মসজিদ প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করে এসব ঘোষণা দেন জুবায়েরপন্থিরা, যারা নিজেদের ‘শুরায়ে নিজাম’ পরিচয় দিয়ে থাকেন।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন উত্তরার জামিয়াতুল মানহাল আল কওমিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কেফায়েতুল্লাহ আজহারী।
তিনি বলেন, “সাদপন্থিদের সকল কার্যক্রম রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে; টঙ্গীতে হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনতে হবে; কাকরাইল মারকাজ ও টঙ্গীর ইজতেমা মাঠসহ তাবলিগের সকল কার্যক্রম ‘শুরায়ে নিজামের’ অধীনে করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।”
‘গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে টঙ্গী ইজতেমা মাঠে অবস্থানরত তাবলিগ জামাতের সাথি ও মাঠে অবস্থিত মাদ্রাসা ছাত্র ও শিক্ষকদের ওপর বিনা কারণে সাদপন্থীদের হামলা ও হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে’ আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, সাদপন্থিদের কার্যক্রমে ভারত ও ইসরায়েলের মদদ রয়েছে।
গত ৫ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে জুবায়ের সমর্থকরা সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ করাসহ ৯ দফা দাবি জানায়।
দুই পক্ষের বিরোধের মধ্যেই গত সপ্তাহে সংঘর্ষে জড়ান মাওলানা জুবায়ের আহমদ ও দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা। তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে ১৭ ডিসেম্বর গভীর রাতের এ সংঘাতে অন্তত তিনজন নিহতের পাশাপাশি দুই পক্ষের বহু অনুসারী আহত হন।
সংবাদ সম্মেলনে কেফায়েতুল্লাহ আজহারী অভিযোগ করেন, ওই রাতে টঙ্গীতে ইজতেমার প্রস্তুতি ও মাঠ পাহারার দায়িত্বে থাকা তাবলিগের সাথি এবং সেখানে অবস্থিত মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর অতর্কিতে রাম দা, কিরিচ, লোহার রডের মতো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে সাদপন্থিরা। এতে তাদের তিনজন সাথি নিহত হন এবং অনেক সাথি ও ছাত্র-শিক্ষক আহত হন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “এখান থেকে ঘোষণা দিচ্ছি সাদপন্থিদের কোনো কার্যক্রম কাকরাইল মারকাজে চালাতে দেওয়া হবে না। যারা সরাসরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের মূল হোতাদের প্রায় কাউকেই ধরা হয়নি। মূল হোতাদের আগামী ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে কাকরাইল ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে কেফায়েতুল্লাহ বলেন, “যতোক্ষণ পর্যন্ত খুনিদের গ্রেপ্তার করা না হবে, সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ করা না হবে এবং কাকরাইল ও বিশ্ব ইজতেমার মাঠের কার্যক্রম ‘শুরায়ে নিজামের’ তত্ত্বাবধানে পরিচালনা রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করা হবে- ততোক্ষণ পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
তাবলিগ জামাতের মুরুব্বি শাহরিয়ার মাহমুদ, বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, হাফেজ নাজমুল হাসান কাসেমি, মুফতি মহিউদ্দীন মাসুম, মুফতি আমানুল হক, মাওলানা জুবায়ের আহমেদ অন্যদের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।