চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ থেকে ২০টি সোনার বার উদ্ধারের ঘটনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ জব্দ করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে উড়োজাহাজটির একটি আসনের নিচ থেকে ২ কেজি ৩২০ গ্রাম ওজনের সোনার বার জব্দ করা হয়। এরপরই বিকেলে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উড়োজাহাজটি জব্দ করেন।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ জব্দের ঘটনা এটিই প্রথম বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এক দশক আগে ঢাকায় চোরাচালানের সোনা বহন করায় দুটি উড়োজাহাজ জব্দ করার নজির রয়েছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আব্দুল্লাহ আলমগীর শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. মিনহাজ উদ্দিনের বরাত দিয়ে বলেন, ‘আমরা জেনেছি কাগজপত্রে বিমানটি জব্দ করা হয়েছে। বাংলাদেশ বিমানকে জবাবদিহির আওতায় আনতে এটি জব্দ করা হয়েছে।’
জব্দ করা উড়োজাহাজটি চট্টগ্রামে যাত্রীদের নামিয়ে সকালেই ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়। জব্দ অবস্থায় এটি যাত্রী পরিবহনের কাজে ব্যবহার করতে পারবে কি না, জানতে চাইলে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. মিনহাজ উদ্দিন বলেন, যাত্রী পরিবহনের স্বার্থে ন্যায় নির্ণয়কারী কর্মকর্তা চাইলে তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জিম্মায় দিতে পারেন।
উড়োজাহাজটি আজ সকালে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সহযোগিতায় এই উড়োজাহাজের ‘৯জে’ আসনের নিচ থেকে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা মূল্যের ২ কেজি ৩৩০ গ্রাম ওজনের ২০টি সোনার বার জব্দ করেন কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এই অভিযানে অংশ নেন বিমানবন্দরের নিরাপত্তা শাখার কর্মীরাও। এ ঘটনায় ওই আসনের যাত্রী আতিয়া সামিয়াকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানা এলাকায়। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
কর্মকর্তারা জানান, গ্রেপ্তার আতিয়া সামিয়া সংযুক্ত আরব আমিরাতে ‘ওশেন গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড জুয়েলারি’ নামের একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করেন। দেশেও তিনি অনলাইনে সোনা বিক্রি করেন।
কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সোনার বারগুলো উড়োজাহাজের আসনের নিচে বিশেষ কায়দায় প্লাস্টিকের টেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। উড়োজাহাজটির কারও সহযোগিতা ছাড়া কোনো যাত্রীর পক্ষে এভাবে সোনার বার লুকানোর কথা নয়।
জব্দ করা বোয়িং ৭৭৭-ইআর মডেলের উড়োজাহাজটির মূল্য দেখানো হয়েছে এক হাজার কোটি টাকা। এই ঘটনা বিচারাদেশের জন্য নথি চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
জানতে চাইলে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. মিনহাজ উদ্দিন বলেন, চোরাচালানের পণ্য বহন করা কাস্টমস আইন অনুযায়ী এ উড়োজাহাজটি জব্দ করা হয়েছে। এতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসও জবাবদিহির মধ্যে আসবে।