গেল ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবার ডানা মেলেছে জামায়াতে ইসলামী। এমন অবস্থায় দলটি নিয়ে বিস্ফোরক এক মন্তব্য করলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি বলেছেন- আমরা জামায়াতে ইসলামকে ইসলামি দল মনে করি না। জামায়াতে ইসলাম মদিনার ইসলাম চায় না, তারা মওদুদীর ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
সম্প্রতি ফেনীতে আয়োজিত এক রিসালাত সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন হেফাজত ইসলামের আমির। তার এই মন্তব্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ইসলামী দলগুলো এক প্ল্যাটফর্মে আসার চেষ্টায় বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। জামায়াত নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের জন্য মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর কঠিন সমালোচনায় বিদ্ধ করছেন অনেকে।
বিভিন্ন সূত্রের খবর আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইসলামপন্থী দলগুলোকে একমঞ্চে আনার জন্য ভেতরে-বাইরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জামায়াত। ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে বৃহৎ ঐক্য প্রক্রিয়ার চেষ্টার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকও। জামায়াতের সঙ্গে হেফাজতের ঐক্যের গুঞ্জনও ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এমন পরিস্থিতিতে জামায়াতকে নিয়ে মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর নেতিবাচক মন্তব্য ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ফেনীর শানে রিসালাত সম্মেলনে হেফাজত আমির পরিষ্কার বলেন- আমরা জামায়াতে ইসলামকে ইসলামি দল মনে করি না। জামায়াতে ইসলাম মদিনার ইসলাম চায় না, তারা মওদুদীর ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এখানেই থামেননি তিনি। মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী আরও বলেন- জামায়াতে ইসলাম সব ভ্রান্ত ফেরকা সমূহের মধ্যে নিকৃষ্ট দল। এমনকি তারা কাদিয়ানি সম্প্রদায় থেকেও নিকৃষ্ট। কেননা জামায়াতে ইসলামের দ্বারা ইসলামের যে ক্ষতি হয়েছে, কাদিয়ানিদের দ্বারাও সে ক্ষতি হয়নি।
হেফাজত আমিরের এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিডিয়া ছড়িয়ে পড়লে তাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। অনেকেই মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীকে আওয়ামী লীগের দালাল বলে তার পদত্যাগ দাবি করেন। কেউ মনে করছেন, মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ভারতের ষড়যন্ত্রে পা দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার হেফাজত আমিরের বক্তব্য সঠিক বলেন দাবি করেছেন। ইসলামি দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য কাম্য নয় বলেও অনেকেই মত দিয়েছেন অনেকে।
২০২১ সালের আগস্টে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির নির্বাচিত হন মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি প্রয়াত আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীর স্থলাভিষিক্ত হন। আমির হওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ ২০০ বছর ক্ষমতায় থাকলেও আপত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছিলেন মহিবুল্লাহ। তার ওই বক্তব্যের স্ক্রিনশটও অনেকেই এখন ফেসবুকে শেয়ার করছেন।