মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আগামী ২১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের আয়োজন করছে মুক্তিযোদ্ধা দল। রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দিতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ২০১৭ সালের পর এই প্রথম কোনো সমাবেশে অংশ নিতে যাচ্ছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
সর্বশেষ চলতি বছরের ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনীর দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে সেনা কুঞ্জে যান খালেদা জিয়া। আর আগামী ২১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা দলের সমাবেশের সশরীরে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি।
বিএনপির একটি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসভবনে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত।
তারা খালেদা জিয়াকে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানান। তিনি প্রাথমিকভাবে সমাবেশে থাকার সম্মতি দিয়েছেন। এছাড়া রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির মিডিয়া সেলের অন্যতম সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, আল্লাহ ম্যাডামকে শারীরিকভাবে সুস্থ রাখলে তিনি সমাবেশে যেতে পারেন।
নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির সাবেক এক ছাত্র নেতা বলেন, এই সমাবেশে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে ম্যাডাম খালেদা জিয়া আবার রাজনীতিতে ফিরে আসছেন সেই বার্তা দেওয়া হচ্ছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দিনরাত পরিশ্রম করে দলকে সুসংগঠিত করছেন। এখন ম্যাডামও রাজনীতিতে ফিরে এলে দল আরও বেশি চাঙা হবে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ১২ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন খালেদা জিয়া। আর ২০১৮ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের মামলায় কারাগারে যাওয়ার আগে ৬ ফেব্রুয়ারি গুলশানের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট খালেদা জিয়ার মুক্তির আদেশ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর ৭ আগস্ট নয়াপল্টন বিএনপির সমাবেশে খালেদা জিয়ার ভিডিও বক্তব্য প্রচার করা হয়।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট সংক্রান্ত মামলায় কারাগারে যান খালেদা জিয়া। এরপর ২০২০ সালে করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে তিনি রাজনীতি ও দেশের বাইরে যেতে পারবেন না— এমন শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। যার ফলে, কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও কার্যত গৃহবন্দি ছিলেন তিনি। এই সময়ে বেশ কয়েকবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন খালেদা জিয়া।