২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৭ পৌষ ১৪৩১ 

বিশেষ

শেখ হাসিনার ‘চতুর্থ ভাই’ শাহজাহান ওমর এখন কোথায়?

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রকাশিত: ১১:৫০, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

শেখ হাসিনার ‘চতুর্থ ভাই’ শাহজাহান ওমর এখন কোথায়?

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের একপক্ষীয় নির্বাচনের সময় পল্টি খাওয়া নেতাদের অন্যতম ছিলেন বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার এম শাহজাহান ওমর। কারাগারে থাকা অবস্থায় ২০২৩ সালের ২৯ নভেম্বর হঠাৎ জামিনে মুক্ত হয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হন। নিজেকে শেখ হাসিনার ভাই হিসেবে দাবি করেন। কিন্তু ভাগ্যে দিল না। হঠাৎ করেই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলে যাবে কে জানতো। গণ অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা, পতন হয়েছে আওয়ামী লীগের। সেই থেকে খোঁজ নেই বীর উত্তম শাহজাহান ওমরের।

নৌকা প্রতীকে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ঝালকাঠি-১  আসনের জয়ের পর শাহজাহান ওমর বলেছিলেন- আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চতুর্থ ভাই। তার তিন ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল এবং শেখ রাসেল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহিদ হয়েছেন। সেই কারণে প্রধানমন্ত্রী আমাকে চতুর্থ ভাই হিসেবে গ্রহণ করেছেন। আমি তার দল থেকে নির্বাচন করেছি এবং নির্বাচনে বিজয় অর্জন করেছি।

শাহজাহান ওমরের এমন ভূমিকা লজ্জায় ফেলেছিল বিএনপিকেও। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস দলটির সুদিনে লাপাত্তা হয়ে আছেন জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠ এই নেতা। দুর্নীতি আর ক্ষমতার লোভের কারণে শেষ হয়ে গেছে স্বঘোষিত ‘হ্যাডামওয়ালা’ রাজনীতিবিদ শাহজাহান ওমরের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। হঠাৎ নৌকায় উঠে এমপি হয়ে একূল-ওকূল দুই কূলই হারিয়েছেন। 

সংসদ নির্বাচনের পর রাজাপুর-কাঁঠালিয়ার বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী শাহজাহান ওমরের প্ররোচনায় বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। কাঁঠালিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গত ৪ ডিসেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী জনসভায় প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে তাঁর লোকজনকে দেখা যায়। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও তাঁর হাত ধরে আওয়ামী লীগে আসা কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল জলিল মিয়াজীকে বিজয়ী করতে অংশ নেন প্রচারণায়। এতে আরো বিতর্কিত হয়ে পড়েন শাহজাহান ওমর। 

শাহজাহান ওমরের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ব্যক্তি জানান, তিনি ঢাকা, বরিশাল ও ঝালকাঠির রাজাপুরের বাড়িতে নেই। হয়তো কোনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আত্মগোপনে আছেন। কারো সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখছেন না। তাঁর মোবাইল ফোন নম্বরটিও বন্ধ রয়েছে। ঝালকাঠি জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শাহাদাৎ হোসেন বলেন, শুধু ঝালকাঠিবাসীর কাছেই নয়, শাহজাহান ওমর সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে মীরজাফর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।

ঝালকাঠি আইনজীবী সমিতির সদস্য শামীম আলম বাবু জানান, শাহজাহান ওমর বিএনপির রাজনীতি করলেও তিনি আওয়ামী লীগের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। ঝালকাঠিতে বিএনপি শক্তিশালী হোক, এটা তিনি কখনো চাননি। তিনি বরাবরই চেয়েছেন, ঝালকাঠি বিএনপি দুর্বল থাকুক। বিএনপিকে দুর্বল রেখে তিনি ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করেছেন। নানা অপকর্ম ও দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তিনি স্বৈরাচারের প্রেতাত্মা হিসেবে কাজ করেছেন।