২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৭ পৌষ ১৪৩১ 

সোশ্যাল মিডিয়া

উপদেষ্টাদের ওপর চটেছেন ফরহাদ মজহার

বাংলা ওয়াচ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:২৪, ২৩ অক্টোবর ২০২৪

উপদেষ্টাদের ওপর চটেছেন ফরহাদ মজহার

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র ইস্যুতে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। একটি সংবাদমাধ্যমকে খোদ রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র তিনি দেখেননি। এর কোনো অনুলিপি তার কাছে নেই। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য পাওয়া যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কাছ থেকে। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে দিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভূঁইয়া। তার সেই স্ট্যাটাসের সমালোচনা করে এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইস্যুতে এবার মন্তব্য করলেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার।

শেখ হাসিনার পদত্যাগ প্রশ্নে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভূঁইয়া ফেসবুকে লিখেছেন, রাষ্ট্রপতির কাছে মৌখিকভাবে পদত্যাগ করেছিল স্বৈরাচারী খুনি হাসিনা। পদত্যাগপত্র নিয়ে বঙ্গভবনে যাওয়ার কথা থাকলেও ছাত্র-জনতা গণভবনের কাছাকাছি চলে আসলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় খুনি হাসিনা।

এ স্ট্যাটাসের প্রসঙ্গ টেনে ফরহাদ মজহার বলেছেন- আসিফ, এটা সত্য নয়। মৌখিকভাবে পদত্যাগের কথা কখনই বলা হয় নি। সবসময়ই প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগ পত্র দেবার কথা বলা হয়েছে। যে জন্য আমি আমার একটি ভিডিওতে পদত্যাগপত্র দেখতে চেয়েছি। আপনারা তখন দেখাতে পারেন নি। এখন কেন মৌখিক পদত্যাগ পত্রের ভুয়া গল্প প্রচার করছেন? শুরু থেকেই আমরা বলেছি যে চুপ্পুর কাছে শপথ নেওয়া ছিল আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কিন্তু আপনারা সেটাই করেছেন। আপনারা সেনা সমর্থিত উপদেষ্টা সরকার বানিয়েছেন। বাস্তব সত্য স্বীকার করুন। এটা কি ঠিক করেছেন?  আমার ভিডিওগুলো আবার শুনুন। পোস্টগুলো আবার পড়ুন।

উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে ফরহাদ মজহার আরও লিখেছেন- আপনারা আমাদের কারো কথা শোনেন নি। এমনকি কথা বলাও প্রয়োজন বোধ করেন নি। আপনাদের অনেকে দাবি করেছেন, ট্রেন মিস হয়ে গিয়েছে, এখন আর কিছু করা যাবে না। এটাও ঠিক নয়। অবশ্যই সমাধান আছে। এখন সমাধানের কথা আলোচনা না করে খামাখা পদত্যাগ পত্র নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াবেন না। উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং আপনাদের এখন ব্যাখ্যা করতে হবে কোন যুক্তিতে আপনারা গণঅভ্যুত্থানকে ফ্যাসিস্ট সংবিধানের অধীনে ঢুকিয়েছেন; সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লবে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছেন। এখন যে ভয়াবহ রাজনৈতিক এবং আইনী জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে সেই অবস্থা থেকে নিষ্ক্রান্ত হবেন কিভাবে? সেনা সমর্থিত উপদেষ্টা সরকারতো এখনো অবৈধ। এর বৈধতা প্রতিষ্ঠার জন্য কি করছেন?

ফেসবুকে ফরহাদ মজহার আরও বলেছেন- আসিফ নজরুলসহ আপনারা সেনা প্রধান এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনার নিযুক্ত সেনাবাহিনীর কিছু উচ্চ পদস্থ অফিসারদের সঙ্গে নিয়ে যে রাজনৈতিক আঁতাত গড়ে তুলেছিলেন সেটা শুরু থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। এখন তা অনেক জটিল রূপ পরিগ্রহণ করেছে।  শুধু তাই নয়, আপনারা সাধারণ সৈনিকদের দেশপ্রেম এবং গণঅভ্যুত্থানে তাদের অবদানকেও অস্বীকার করেছেন। জুলাই অভ্যুত্থান ছিল ছাত্র-জনতা-সৈনিকদের অভ্যুত্থান । কিন্তু আপনারা সাধারণ সৈনিকদের অবদান অস্বীকার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনার নিযুক্ত সেনা প্রধানদের সঙ্গে আঁতাত করেছেন। সাধারণ সৈনিকদের দেশপ্রেম এবং জনগণের প্রতি আনুগত্যকে গণশক্তিতে রূপান্তরিত করবার পরিবর্তে আপনারা ফ্যাসিস্ট হাসিনার জেনারেলদের সঙ্গে আঁতাত করা কি ঠিক হয়েছে? আত্মসমালোচনা করতে শিখুন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে বর্তমান সমস্যার সমাধানে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ফরহাদ মজহার। তিনি লিখেছেন- আসুন, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে নিষ্ক্রান্ত হওয়ার সঠিক রণনীতি ও রণকৌশল আমরা আগে নির্ণয় করি। মনে রাখবেন, জনগণই আমাদের শক্তির উৎস, জেনারেলরা নয়। জনগণের শক্তির মানে হচ্ছে ছাত্র-জনতা ও সৈনিকের মৈত্রী। এই মৈত্রীকে জোরদার করুন। জনগণের জয় হোক।