১৪ জানুয়ারি ২০২৫ , ৩০ পৌষ ১৪৩১ 

স্পোর্টস

তামিম ইকবালের ব্যাটের যত গর্জন

বাংলা ওয়াচ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৩০, ১১ জানুয়ারি ২০২৫

তামিম ইকবালের ব্যাটের যত গর্জন

বাংলাদেশের ক্রিকেটের অনেক ‘আইকনিক’ মুহূর্তের জন্ম দিয়েছেন তামিম ইকবাল। তার ব্যাটে জন্ম হয়েছে দেশের ক্রিকেটের অনেক প্রথমের। দেশের সফলতম ব্যাটসম্যান পরিচয় নিয়ে প্রায় এক দশক খেলেছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। সম্প্রতি রানের হিসেবে তাকে টপকে গেছেন মুশফিকুর রহিম। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় বেলায়ও অনেক কীর্তিতে সবার ওপরে তামিমের নাম।

শুক্রবার রাতে (১০ জানুয়ারি) সামাজিক মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের ঘোষনা দেন তামিম ইকবাল।

উল্লেখযোগ্য কিছু অর্জন ও কীর্তি:

- তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের প্রথম ও এখন পর্যন্ত একমাত্র ব্যাটসম্যান তামিম। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করে অনন্য এই কীর্তি গড়েন তিনি।

- আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রান করা বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান তামিম। গত অগাস্টে তার সঙ্গী হন মুশফিক। পরে তামিমকে ( বাংলাদেশের হয়ে ১৫ হাজার ১৯২ রান, বিশ্ব একাদশের হয়ে ৫৭) টপকে এক নম্বরে উঠে যান মুশফিক (১৫ হাজার ৩০০ রান)।

- তিন সংস্করণ মিলিয়ে তামিমের সেঞ্চুরি ২৫টি। বাংলাদেশের আর কারও ২০টির বেশি শতক নেই।

- আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৯৪ ফিফটি ও ২৫ সেঞ্চুরিতে তামিমের পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংস মোট ১১৯টি। যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। এই তালিকায় দুই নম্বরে সাকিব আল হাসান, ১১৪টি।

- তিন সংস্করণ মিলিয়ে অন্তত ৫০০ রান করা বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের সর্বোচ্চ গড় তামিমের, ৩৫.৪১।

- ওয়ানডেতে ৮ হাজার রান করা বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান তামিম। ২৪৩ ম্যাচে ৮ হাজার ৩৫৭ রান নিয়ে শেষ হলো তার ক্যারিয়ার। দুইয়ে থাকা মুশফিকের নামের পাশে ৭ হাজার ৭৯৩ রান।

- ওয়ানডেতে ছক্কার সেঞ্চুরি করা দেশের প্রথম ব্যাটসম্যানের নাম তামিম। ১০৩ ছক্কায় থেমেছেন তিনি। তাকে টপকে আপাতত ১০৭ ছক্কা মাহমুদউল্লাহর।
তিন সংস্করণ মিলিয়েও তামিমের (১৮৮) চেয়ে বেশি ছক্কা শুধু মাহমুদউল্লাহর (২০৮টি)।

- ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির রেকর্ড তামিমের। ২০০৮ সালে আয়ারল্যন্ডের বিপক্ষে ১২৯ রানের ইনিংস খেলার দিন তার বয়স ছিল ১৯ বছর ২ দিন।

- ওয়ানডে টানা পাঁচ ম্যাচে পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংস খেলা বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান তামিম। পরে তার সঙ্গী হন সাকিব আল হাসান।

- ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে একাধিক দেড়শছোঁয়া ইনিংস খেলা একমাত্র ব্যাটসম্যান তামিম। ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তার ১৫৪ রান প্রায় ১১ বছর দেশের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড ছিল। ২০২০ সালে ১৫৮ রান করে তিনিই ভাঙেন সেই রেকর্ড। এক ম্যাচ পর ১৭৬ রান করে সেটি নিজের করে নেন লিটন কুমার দাস।

- টেস্টেও একসময় দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল তামিমের। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০৬ রান করেছিলেন তিনি। পরে ২১৭ রান করে সেটি ছাড়িয়ে যান সাকিব। এখন ২১৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে রেকর্ডটি মুশফিকের।

- টেস্টে টানা পাঁচ ইনিংসে ফিফটি করা বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান তামিম।

- ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি করার পথে ইমরুল কায়েসের সঙ্গে ৩১২ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন তামিম। টেস্ট ইতিহাসে দলের দ্বিতীয় ইনিংসে এটিই ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড।

- আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২২ বার ম্যান অব দা ম্যাচ পুরস্কার জিতেছেন তামিম। বাংলাদেশের হয়ে তার চেয়ে বেশি এই স্বীকৃতি পেয়েছেন শুধু সাকিব, ৪৫ বার।

- ম্যান অব সিরিজ পুরস্কার ৭ বার পেয়েছেন তামিম। এই তালিকায়ও তার ওপরে শুধু সাকিব, ১৭ বার।

- আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০ হজারের বেশি বল খেলা বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যনের একজন তিনি। ৩৯১ ম্যাচের ক্যারিয়ারে ২০ হাজার ৯৯৭ বল মোকাবিলা করেছেন তিনি। মুশফিকুর রহিম ২৩ হাজার ৪৭০ বল খেলে সবার ওপরে।

- আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শূন্যের বিব্রতকর রেকর্ডটিও তামিমের। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৩৬ বার খালি হাতে ফিরেছেন তিনি। মাশরাফি বিন মুর্তজা ৩৩ বার শূন্য রানে আউট হয়ে দুই নম্বরে।

- ওয়ানডেতে ৩৭ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন তামিম। এর মধ্যে জয় পেয়েছেন ২১টিতে আর জয়-পরাজয় আসেনি ২ ম্যাচে। সাফল্যের শতকরা হার ৬০ শতাংশ। বাংলাদেশকে অন্তত ৫ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়া অধিনায়কদের মধ্যে সাফল্যের হারে তামিমই সেরা।

- বাংলাদেশের হয়ে ৩৮৭ ও সবমিলিয়ে ৩৯১ ম্যাচে থামল তামিমের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন মুশফিক (৪৬৮), সাকিব (৪৪৭) ও মাহমুদউল্লাহ (৪২৯)।

-উইকেটকিপিং ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে তিন সংস্করণ মিলিয়ে একশ ক্যাচ নেওয়া বাংলাদেশের চার ফিল্ডারের একজন তামিম। তার ক্যাচ ১০৬টি। সৌম্য সরকারের ক্যাচ ১১২টি, সাকিব আল হাসানের ১২০টি ও মাহমুদউল্লাহর ১৭২টি।