বিদেশ থেকে নেওয়া বাংলাদেশের ঋণ আরো বেড়েছে; ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে বৈদেশিক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১০৪ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলারে। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী ঋণের ওই পরিমাণ দেশীয় মুদ্রায় যা ১২ লাখ ৭৩ হাজার ১৯২ কোটি টাকার সমান (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে বিদেশ থেকে সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর নেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ৮৪ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার, যা মোট ঋণের ৮১ শতাংশ। আর বাকি ১৯ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার ঋণ গেছে বেসরকারি খাতে।
প্রতিবেদন বলছে, বিদেশি ঋণের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি খাত মিলে ৯১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার দীর্ঘমেয়াদী ঋণ। অর্থাৎ ৮৮ দশমিক ১৯ শতাংশ বিদেশি ঋণই দীর্ঘমেয়াদী। আর বেসরকারিখাতে স্বল্পমেয়াদী ঋণ এসেছে ১২ দশমিক ৬২ বিলিয়ন।
আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দেড় দশকের শাসনামলে ব্ড় বড় প্রকল্প ও অবকাঠামো খাতের উন্নয়নের কাজে বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে।
ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যান। এর আগে জুলাই পর্যন্ত সময়ে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ১০৩ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে সাড়ে ১৫ বছরে সরকার প্রায় ৮৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ করে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার বিদায় নেওয়ার বছর শেষে (২০০৬ সাল শেষে) বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৯ বিলিয়ন ডলারের কিছু কম। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছরে তা সোয়া দুই বিলিয়ন ডলারের মত বাড়ে। তাতে ২০০৮ সাল শেষে তা দাঁড়ায় ২১ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি।
বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে যদিও বৈদেশিক মুদ্রায় বিদেশি ঋণ নেওয়াকে সব সময় স্বাগত জানান অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। এসব ঋণের একটা অংশ দর কষাকষি বা কম বাছবিচার করে নেওয়ার সমালোচনাও রয়েছে। শেষের দিকে উন্নয়ন কাজের চাপ সামাল দিতে উচ্চ সুদে ঋণ নেওয়ার বিষয় নিয়েও সমালোচনা করেছেন বিশ্লেষকরা।
তাদের মতে, সাবেক সরকারের ঋণ ব্যবস্থাপনা যথাযথ না থাকায় দেশি ও বিদেশি উভয় উৎস থেকে বেশি পরিমাণে ঋণ নেওয়া হয়েছে।